অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনা ও কয়েকটি প্রধান শহরের আজকের ইফতার ও আগামীকালের সেহরির শেষ সময়
কবির আহমেদ, ইউরোপ ডেস্কঃ আজ বুধবার ১৩ এপ্রিল অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় ১২ তম রোজার ইফতারের সময় : ১৯:৪২ মিনিট। (Ifter in Vienna at 19:42 p.m)
আগামীকাল বৃহস্পতিবার ১৪ এপ্রিল ভিয়েনায় ১৩ তম রোজার সেহরির শেষ সময় : রাত ৪:৩৪ মিনিট।
ভিয়েনার সাথে অস্ট্রিয়ার অন্যান্য কয়েকটি ফেডারেল রাজ্যের প্রধান শহরের সময়ের পার্থক্য নিম্নে উল্লেখ করা হল,
* Innsbruck (Tirol) + 20 Min.
* Salzburg + 13 Min.
* Villach (Kärnten) + 10 Min.
* Linz (OÖ) + 08 Min.
*Klagenfurt (Kärnten) + 08 Min.
* Graz (Steiermark) + 4 Min.
* St. Pölten (NÖ) + 3 Min
মদ্যপায়ী থেকে ইসলামের বড় সাধক মালেক ইবনে দিনার (রহ:) ইরাকের ইসলামি স্কলার,সাধক ও ইসলামী ধর্মপ্রচারক মালেক ইবনে দিনার (রহ:)।তিনি ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলাম প্রচারের জন্য ভারতে এসেছিলেন। তিনি ইরাকের কুফা নগরীতে জন্ম গ্রহণ করেছেন। তবে জন্ম তারিখ লিপিবদ্ধ করা পাওয়া যায় নি। তিনি ৭৪৮ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।তিনি সম্ভবত দক্ষিণ ভারতের থালাঙ্গারা, কসরগোদ, কেরলে ইসলামের দাওয়াতের কাজ করেছিলেন।মালেক ইবনে দিনার (রহ:) বংশ পরম্পরায় সাহাবা পরবর্তী প্রজন্ম অর্থাৎ একজন তাবেঈ ছিলেন।
মালেক ইবনে দিনার যার তওবার কাহিনী আমাদের জীবনের মোড় ঘুড়িয়ে দিতে পারে।একটি স্বপ্ন মহান দরবেশ মালিক ইবনে দিনার রহঃ কে তাওবার দিকে নিয়ে যায়। তাঁকে তাঁর তাওবার পিছনের কারণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, আমি ছিলাম পুলিশের লোক এবং মদ্যপায়ী।
ইতিহাস থেকে জানা যায় যে,ইরাকের বিখ্যাত আলেম ছিলেন বিন দিনার(রহ:)।একবার এক বিশাল মাহফিলে বক্তব্য দিতে দাড়াতেই এক শ্রোতা বলে উঠলেন, আপনার বক্তব্য শুরু করার আগে একটা প্রশ্নের উত্তর দিন। মালেক বিন দিনার প্রশ্ন করার অনুমতি দিলেন।
বয়স্ক শ্রোতা বললেন, আজ থেকে দশ বছর আগে আমি আপনাকে মাতাল অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেছি, আপনি সে অবস্থা থেকে কিভাবে ফিরে এলেন? মালেক বিন দিনার কিছুক্ষণ মাথা নিচু করে রইলেন। তারপর বললেন,হ্যাঁ আপনি ঠিকই বলেছেন আমিই সেই ব্যক্তি।
শুনুন তাহলে আমার কাহিনী : আমি মদ্যপায়ী ছিলাম, মুসলিম হলেও কোন ধর্ম কর্ম করতাম না। একবার পবিত্র রমজান মাসের শেষ দশকের এক কদরের রাতে মদের দোকান বন্ধ ছিল।দোকানীকে অনুরোধ করে এক বোতল মদ কিনলাম বাসায় নিয়ে পান করবো বলে এই শর্তে।
বাসায় এসে দেখলাম আমার স্ত্রী নামাজ পড়ছে।আমি আমার ঘরে চলে গেলাম এবং বোতলটা টেবিলে রাখলাম।আমার তিন বছরের আদরের শিশু মেয়েটা দৌড়ে আসলে টেবিলের সাথে ধাক্কা খেয়ে মদের বোতল মাটিতে পরে ভেঙ্গে যায়।তখন আমার অবুজ মেয়েটি খিলখিল করে হাসতে লাগল। ভাঙ্গা বোতল ফেলে দিয়ে আমি ঘুমিয়ে গেলাম।
সে রাতে আর মদ খাওয়া হলো না। পরের বছর আবার লাইলাতুল কদর এলো।আমি আবার মদ নিয়ে বাড়ি ফিরে এলাম। বোতলটা টেবিলে রাখতেই আমার হঠাৎ বোতলটার দিকে তাকাতেই কান্নায় বুক ফেটে গেল।কেননা তিন মাস পূর্বে আমার সেই শিশু কন্যাটি মারা গেল।

বোতলটা বাইরে ফেলে দিয়ে ঘুমিয়ে পরলাম।তারপর আমি স্বপ্নে দেখছি এক বিরাট সাপ আমায় তাড়া করছে।এতো বড় সাপ আমি জীবনেও দেখিনি।আমি ভয়ে দৌড়াচ্ছি। এমন সময় এক দুর্বল বৃদ্ধকে দেখলাম। বৃদ্ধ আমাকে বলল,আমি খুব দূর্বল এবং ক্ষুধার্ত। এই সাপের সাথে আমি পারবনা।তুমি বরঞ্চ এই পাহাড়ের ডানে উঠে যাও। পাহাড়ে গিয়ে দেখি দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে।আর পিছনে এগিয়ে আসছে সাপ।বৃদ্ধের কথা মতো ডানে ছুটলাম।দেখলাম সুন্দর একটা বাগান, যেখানে ছোট ছোট বাচ্চারা খেলছে।গেইটের দারোয়ান বলল : বাচ্চারা দেখতো এই লোকটিকে?একে সাপটা খেয়ে ফেলবে নয়তো আগুনে ফেলে দিবে।দারোয়ানের কথায় বাচ্চারা ছুটে এলো।তার মাঝে আমার মেয়েটাকেও দেখতে পেলাম।মেয়েটা আমার ডান হাত জড়িয়ে ধরে বাম হাতে থাপ্পর দিয়ে সাপটিকে দূরে ফেলে দিলো।আর অমনেই সাপ চলে গেল।আমি অবাক হয়ে বললাম : মা তুমি এতো ছোট! আর এতো বড় সাপ তোমায় ভয় পায়? মেয়ে বলল : বাবা আমি জান্নাতি মেয়ে,জাহান্নামের সাপ আমাকে ভয় পায়। বাবা,তুমি ঐ সাপকে তুমি চিনতে পেরেছো? আমি বললাম : না মা।
আমার মেয়ে বলল : বাবা! এতো তোমার নফস বা আত্মা।নফসকে তুমি এতো বেশি খাবার দিয়েছ যে সে আজ এতো বড় এতো শক্তিশালী সাপে পরিণত হয়েছে।সে তোমাকে আজ জাহান্নাম পর্যন্ত তারিয়ে নিয়ে এসেছে।মেয়েকে বললাম : পথে এক দূর্বল বৃদ্ধ তোমাকে এখানে আসার পথ বলে দিয়েছে সে কে?
মেয়ে বলল : তাকেও চিনতে পারো নি ? সে তোমার রুহ।তাকে তো কোন দিনও খেতে দাওনি। সে না খেয়ে এতোই দূর্বল হয়ে পরেছে যে, কোন রকমে বেঁচে আছে।পরদিন সকালে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল এবং সম্পূর্ণ জীবন্ত স্বপ্ন আমার চোখের সামনে ভেসে উঠল।
সেই দিন থেকে আমি আমার রুহকে খাদ্য দিয়ে যাচ্ছি আর নফসের খাদ্য একেবারেই বন্ধ করে দিয়েছি।চোখ বন্ধ করলেই সেই ভয়াল রুপটি দেখতে পাই আর দেখি রুহকে। আহা! কতো দুর্বল হাটতে পারেনা। ঝরঝর করে কেঁদে ফেললেন মালিক বিন দিনার।
তাই আসুন,আমরা আমাদের নিজেদের নিজের নফসকে হেফাজত করি। নয়তো চিরস্থায়ী হবে জাহান্নাম।মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে বুঝার তওফিক দান করুক,আমিন।
14,573 total views, 1 views today