বরগুনাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ এম ভি “অভিযান ১০” এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৩৯,অগ্নিদগ্ধ হয়ে আহত শতাধিক

ঢাকার সদর ঘাট থেকে সন্ধ্যায় ছেড়ে যাওয়ার পর রাত ৩ টায় লঞ্চটি ঝালকাঠি জেলার সুগন্ধা নদীর পোনাবালিয়ার দিয়াকুল এলাকায় আসার পর ইঞ্জিন থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে।
কবির আহমেদ, বাংলাদেশ ডেস্কঃ বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে একটি যাত্রীবাহী লঞ্চে আগুন লেগে অন্তত ৩৭ জন মারা গেছেন বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মইনুল হক।তিনি স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন লঞ্চের ভেতরে এবং বাইরে থেকে এই পর্যন্ত ৩৭ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
তাছাড়াও তিনি আরও জানান,রাত তিনটার দিকে যখন লঞ্চে আগুন লাগে তখন অধিকাংশ যাত্রীই ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন। লঞ্চে আগুন লাগার পরে অনেক নদীতে লাফিয়ে পড়ে। ফলে নদী থেকেও মৃতদেহ উদ্ধার করা হচ্ছে। ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে মৃতের সংখ্যা আরও অনেক বাড়তে পারে।
এদিকে বৃটিশ সংবাদ সংস্থা বিবিসির বাংলা বিভাগ জানান, বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল হাসান বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘এমভি অভিযান’ নামে একটি লঞ্চ ঢাকা থেকে বরগুনার উদ্দেশ্যে গতরাতে ছেড়ে যায়। ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে পৌঁছালে চলন্ত লঞ্চে আগুন ধরে গেলে পুরো লঞ্চটিই মুহূর্তের মধ্যেই ভস্মীভূত হয়ে যায়।
এদিকে ঝালকাঠি জেলার স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছেন ঢাকা থেকে বরগুনায় ছেড়ে যাওয়া চলন্ত লঞ্চে আগুনে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।সংবাদ মাধ্যম আরও জানান, বরগুনাগামী বহুতল বিশিষ্ট একটি চলন্ত লঞ্চে আগুন লাগলে এই দুর্ঘটনা ঘটে।আগুন লাগা অবস্থায় সুগন্ধা নদীতে অবস্থান করছিল।সুগন্ধা নদীর ঝালকাঠির পোনাবালিয়ার দিয়াকুল এলাকায় এমভি অভিযান-১০ নামক দ্বিতল লঞ্চটি পৌঁছালে এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটে। এতে প্রাথমিকভাবে ঝালকাঠির প্রশাসন থেকে ৩৭ জনের মরদেহ উদ্ধারের কথা বলা হয়েছে এবং শতাধিক যাত্রীদের অগ্নিদগ্ধ হয়ে আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিস। শতাধিক অগ্নিদগ্ধকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
প্রাণে বেঁচে যাওয়া লঞ্চের যাত্রীরা জানিয়েছেন, হঠাৎ করে রাত ৩টার দিকে লঞ্চের ইঞ্চিনরুমে আগুন লেগে যায়। এরপর সেই আগুন পর্যায়ক্রমে ছড়িয়ে পড়ে পুরো লঞ্চে। এসময় লঞ্চে কয়েকশ যাত্রী ছিলেন। কেউ কেউ প্রাণে বাঁচতে লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাঁপ দেন।
বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারী পরিচালক মো.বেলাল উদ্দিন জানান, বরিশাল ও ঝালকাঠির স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে ।আমরা এখান থেকে ৩৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছি।এছাড়াও আনুমানিক ৬০-৭০ জন অগ্নিদগ্ধ উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেছি ।তাদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।কি কারণে আগুনের সূত্রপাত্র হয়েছে তা বলে যাচ্ছে না তবে ধারণা করা যাচ্ছে ইঞ্জিন রুম থেকে আগুন লাগতে পারে।
এই দুর্ঘটনার পর ঢাকা,বরিশাল, বরগুনা এবং ঝালকাঠি সহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।আত্মীয়স্বজনদের কান্না আর আহাজারিতে আকাশ পাতাল ভারী হয়ে উঠেছে।
14,607 total views, 1 views today