সোনারগাঁয়ে কঠোর গোপনীয়তায় বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদের দাফন, এলাকায় ক্ষোভ
ঢাকা থেকে মহিবুর রহমান আদনানঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আব্দুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকরের পর তার লাশ কঠোর গোপনীয়তার মধ্যে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার শম্ভুপুরা ইউনিয়নের হোসেনপুর এলাকায় দাফন করা হয়েছে। মাজেদের শ্বশুরবাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে শনিবার দিনগত রাত ৩টার দিকে তার লাশ দাফন করা হয়।
স্থানীয় প্রশাসন, শম্ভুপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ ও একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনির লাশ সোনারগাঁওয়ে দাফন করার খবর সকালে বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সোনারগাঁওয়ে মাজেদের লাশ দাফন করায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ ও লাশ অপসারণের দাবি জানান।
সোনারগাঁও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, উপজেলা আওয়ামী লীগ ও স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ খুনি মাজেদের লাশ সোনারগাঁওয়ে দাফন করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। অনেকে মাজেদের লাশ অপসারণ না করা হলে তা কবর থেকে তুলে মেঘনা নদীতে ভাসিয়ে দেয়ার ঘোষণা দেন। শনিবার দিনগত রাত ১২টা ১ মিনিটে আবদুল মাজেদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। পরে তার লাশ দাফন নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। তার গ্রামের বাড়ি ভোলায় দাফনের কথা থাকলেও সেখানকার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও স্থানীয়দের প্রবল আপত্তির মুখে ঝুঁকি নিতে রাজি হয়নি ভোলার প্রশাসন।
শেষ পর্যন্ত শ্বশুরবাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে দাফনের সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে শনিবার বিকালে লালমোহন উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ভোলা ৩ আসনের সংসদ সদস্য নূরন্নবী চৌধুরী শাওন এমপি বলেন, খুনি মাজেদের লাশ ভোলাবাসী গ্রহণ করবে না। প্রয়োজনে মাজেদের লাশ বঙ্গোপসাগরে ভাসিয়ে দেওয়া হবে। রোববার প্রথম প্রহরে (রাত ১২টা এক মিনিট) ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদকে (৭২) ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ৪৪ বছর ৭ মাস ২৬ দিন পর খুনি মাজেদের ফাঁসি হয়। এতে শাহজাহানের নেতৃত্বে মনির ও সিরাজ জল্লাদ হিসেবে কাজ করেছে। বঙ্গবন্ধুর ঘাতকদের মধ্যে এখন পর্যন্ত মোট ৬ জনের সাজা কার্যকর হল। পলাতক আছে আরও ৫ খুনি। দণ্ড মাথায় নিয়ে এক খুনি বিদেশেই মারা গেছে। আদালত ১২ জনের মৃত্যুদণ্ড দেন।
4,140 total views, 1 views today