“বাংলাদেশের রক্ষাকবচ” সুন্দরবন রক্ষা করা সময়ের বড়ো দাবি

 ভোলা থেকে, ব্যুরো চীফ রিপন শানঃ সুপার সাইক্লোন আমফানের তান্ডব থেকে বাংলাদেশকে নিজের বুক পেতে রক্ষা করলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন ।

সুন্দরবন আবারও প্রমাণ করলো ঘুর্ণিঝড় নৈরাজ্য ও সাগর প্রকৃতির ক্রোধ ঠেকাতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বন্ধু সুন্দরবন।

এবারই প্রথম নয়, ১৯৮৮, ১৯৯৭ সাল ছাড়াও  ২০০৭ এর সিডর, ২০০৯ এর আইলা, ২০১৬ এর রোয়ানু, ২০১৮ এর বুলবুল, ২০১৯ এর ফনী এবং সর্বশেষ গত ২০ মে’র আম্পানের আঘাত থেকে বাংলাদেশের দক্ষিনাঞ্চলকে  ব্যাপক মৃত্যু আর  ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা করেছে সুন্দরবন। আম্পানের ২২০ কিলোমিটারের ঝড়ো বাতাসকে ১৫১ কিলোমিটারে নামিয়ে আনে সুন্দরবন । জলোচ্ছাসের উচ্চতাও ৩ থেকে ৪ ফুট কমিয়ে দেয় সুন্দরবন। বারবার বাংলাদেশের জন্য সুন্দরবন প্রাকৃতিক রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। অথচ এই সুন্দরবনের প্রতি নেই আমাদের কোন মায়া।                            

সুন্দরবনের কোল ঘেঁষে  গড়ে তোলা হচ্ছে সুন্দরবন ধ্বংসকারী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র, কল-কারখানা। নদীতে তেলবাহী ট্রলার ফুটো করে তেল ছড়িয়ে প্রায় বিপন্ন করা হচ্ছে সুন্দরবনের  বৃক্ষরাজি, জীব বৈচিত্র্য। কি নির্মমভাবে হত্যা করছি আমরা নিজেরাই নিজেদের শ্বাসমূলীয় রাজ্যকে। সুন্দরবনকে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় শ্বাসমূলীয় রাজ্য। দুই বাংলায় ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার জুড়ে সুন্দর বনের ৬ হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার বাংলাদেশের অংশে।                    

বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী অঞ্চলে গঙ্গা মেঘনা ও ব্রম্মপুত্র নদীত্রয়ের অববাহিকায় বদ্বীপে প্রশস্ত এই বনভূমি সুন্দরবন অবস্থিত।  সুন্দরবনে রয়েছে বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার । সর্বশেষ জরিপে মাত্র ১০৬টি বাঘের হিসাব পাওয়া যায়‌।রয়েছে  লক্ষাধিক চিত্রা হরিণ । ২৭০ প্রজাতির পাখি‌। জলে রয়েছে ১২০ প্রজাতির মাছ । আছে স্তন্যপায়ী প্রাণী ,সরিসৃপ ইত্যাদি। বনের ভিতর রয়েছে ৬৫টি পুকুর। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পায়। বাংলাদেশের বিপদের বন্ধু সুন্দরবনকে রক্ষা এখন সময়ের বড়ো দাবি ।

 6,166 total views,  1 views today