স্বামী পালিয়েছে , স্বজনরা অস্বীকৃতি জানিয়েছে , হতভাগা মনোয়ারার লাশ দাফন করেছে পুলিশ

ব্যুরো চীফ,রিপন শানঃ জীবন-মৃত্যুর সার্বক্ষণিক সঙ্গী স্বামী স্ত্রী। পৃথিবীতে সব থেকে নিরাপদ আশ্রয় স্থল সন্তানের কাছে তার বাবা-মা ও পিতৃ পরিবার। আর একজন মানুষ হিসেবে তার অন্যতম অধিকার মৃত্যু পরবর্তী সম্মানজনক শেষকৃত্য। এই করোনাকালে অনেক চেনা মানুষ কেন যেন অচেনা পাষাণ হয়ে যাচ্ছে।
১১ জুন ২০২০ বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়ার্টার মিডিয়া সেল প্রেরিত প্রেসনোটে জানানো যায়-মনোয়ারা বেগম (২৫)। যিনি তাঁর নিকটজনদের একটু স্বচ্ছলতার জন্য নিজের জীবন নিজের সুখ স্বাচ্ছন্দ বিলিয়ে দিয়ে স্বামীর সাথে ঢাকায় গার্মেন্টসে কাজ করতেন। তার জীবনে যারা ছিলেন ওতোপ্রোতভাবে জড়িত সেই স্বামী ও পিতার পরিবার করোনা সন্দেহে তার লাশ দাফনে অস্বীকৃতি জানায়, ফেলে রেখে যায় তার লাশ। সংবাদ পেয়ে তার দাফনের দায়িত্ব নেয় নীলফামারী জেলা পুলিশ।
নীলফামারীর মনোয়ারা বেগম (২৫), স্বামী শরিফুল ইসলাম সহ ঢাকায় একটি পোষাক কারখানায় কাজ করত। ঢাকায় অবস্থানকালে সর্দি-কাশী ও জ্বর উপসর্গ নিয়ে গত ৫ জুন ২০২০ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য স্বামীসহ ভর্তি হয়ে করোনা ভাইরাস সংক্রমন সন্দেহে নমুনা প্রদান করেন । রিপোর্ট অপেক্ষমান। চিকিৎসারত অবস্থায় ৯ জুন ২০২০ রাত দেড়টার সময় মনোয়ারা বেগম রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। অতঃপর স্বামীর বাড়ী ও পিতার বাড়ীর লোকজন মৃতদেহ রংপুর হতে আনবেনা এবং ঐ থানা এলাকায় দাফন করবেনা মর্মে বিষয়টি জলঢাকা পৌরসভার প্যানেল মেয়র জানতে পারলে তিনি ৯ জুন ২০২০ জলঢাকা থানার অফিসার ইনচার্জ কে জানায়।
প্যানেল মেয়রের সহায়তায় উক্ত লাশ দাফনের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে জলঢাকায় আনলে মৃতার স্বামী শরিফুল ইসলাম বঙ্গবন্ধু চত্ত্বরে মৃতদেহ মাইক্রোতে রেখে কৌশলে পালিয়ে যায়। এমনকি পরবর্তীতে মৃতার স্বামীর বাড়ী ও পিতার বাড়ীর এলাকায় মৃতদেহ দাফনের জন্য যোগাযোগ করা হলে তারাও দাফন করতে অস্বীকৃতি জানান।
এমতাবস্থায় নীলফামারী জেলা পুলিশের উদ্যোগে মৃতা মনোয়ারার মৃতদেহ ৯ জুন ২০২০ পৌরসভা কেন্দ্রীয় কবরস্থানে ধর্মীয় বিধান অনুসারে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
4,484 total views, 1 views today