ভিক্ষা নয় ব্যবসাতেই তৃপ্তি পেয়েছে প্রতিবন্ধি ছাত্তার, চায় সরকারি সহযোগিতা

 তজুমদ্দিন (ভোলা) থেকে,শরীফ আল-আমীনঃ ভোলার তজুমদ্দিনের খাসের হাট বাজারের শারিরীক প্রতিবন্ধি আঃ ছাত্তার ভিক্ষাবৃত্তি না করে সংসারে পাঁচ সদস্যে নিয়ে জীবন চালাতে করছেন চায়ের দোকান। সমিতির ঋনের টাকায় সাড়ে তিন বছর আগে ব্যবসা শুরু করে আত্মমর্যাদার সাথে চলছে তার জীবন।বর্তমানে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে চাইছেন সরকারি সহযোগিতা।

খাসের হাট বাজারে প্রতিবন্ধি ছাত্তারের চায়ের দোকানে বসে কথা বলে জানা যায়, শম্ভুপুর ইউনিয়ন মকবুল আহম্মদ হাওলাদার বাড়ির মৃত আলী হোসেনের ছেলে প্রতিবন্ধি আঃ ছাত্তার। বয়স ৩৫ বছর। উচ্চতা আনুমানিক ৪ ফুট। পাঁচ ভাই দুই বোনের মধ্যে একমাত্র প্রতিবন্ধি সাত্তার চতুর্থ। অভাবের সংসারে লেখা পড়া করেছে ৬ষ্ট শ্রেণি পর্যন্ত। ভাই বোনেরা সবাই বিবাহিত। তারা সংসার নিয়ে বসবাস করছেন এলাকার বাহিরে। ভিটে বাড়িসহ ১৬ শতাংশ পৈত্রিক সম্পতির মালিক সাত ভাই বোন। ছাত্তারের সংসারে রয়েছে মা বিবি মরিয়ম, স্ত্রী লাইজু বেগমসহ স্কুলগামী ১২ বছরের ছেলে মোঃ রিফাত ও ৮ বছরের মেয়ে রিপা। ছেলে মেয়ের লেখা পড়া সংসারের ভর পোষণ ও দোকানের ভাড়াসহ ঋনের কিস্থি পরিশোধ করতে গিয়ে রিতিমত হাঁপিয়ে উঠছে প্রতিবন্ধি আঃ ছাত্তারের জীবন।                                                                                                                                                                               

শিশুকাল থেকেই কারো কাছে হাত পাতা কিংবা ভিক্ষা করা অপমান বোধ করতেন তিনি। অন্যের বাসায়, দোকানে, ক্ষেত খামারে কাজ করে দিন যাপন করেছেন। এমনকি গাছ কাটার মত কঠোর পরিশ্রম করে সহযোগিতা করতেন বাবাকে। কখনো কখনো বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নাটকে অভিনয় করছেন প্রতিবন্ধি ছাত্তার। প্রায় ছয় বছর আগে বাবার মৃত্যুর পর কাজ করেই মাকে নিয়ে স্ত্রী সন্তানসহ সংসার চালাচ্ছেন প্রতিবন্ধি ছাত্তার।

সাড়ে তিন বছর আগে স্থানীয় খাসের হাট সোনালী মাল্টি-পারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি থেকে ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে শম্ভুপুর খাসের হাট বাজার চায়ের দোকান শুরু করেন। বর্তমানে ওই সমিতি তাকে একলক্ষ টাকা ঋণ প্রদান করেছেন।কর্মঠ আঃ ছাত্তার স্বভাব চরিত্র ও লেনদেন ভালো হওয়ায় ৫০ টাকা ঋণ দিয়েছেন স্থানীয় অপর একটি এনজিও শাপলা মাল্টি পারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি।

জনকল্যাণ মাল্টি পারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি দিয়েছে ৩০ হাজার টাকা। তবে ঋণের বোঝা ভারি হওয়ায় হতাশা হয়ে পড়েছেন আঃ ছাত্তার। চাইছেন সুদ বিহীন ঋণ ও সরকারি সহযোগিতা। প্রতিবন্ধি ভাতা পাওয়া আঃ ছাত্তার আরো বলেন, আমার কোন জায়গা সম্পদ নাই। ভিক্ষা করা অপমান মনে করি। তাই কাজ করে জীবন চালাইতে চাই। সরকার ও সমাজের বৃত্তবানদের সহযোগীতা পাইলে সমিতির দেনা পরিশোধ করে মা ও পরিবার পরিজন নিয়ে কাজ করে দুই বেলা খেয়ে বাঁচতে পারবো। তার মায়ের নামে একটি বয়স্ক ভাতা বা বিধবা ভাতার কার্ড হলে অনেক উপকার হবে বলে জানান।

সোনালী মাল্টি পারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মাইনুদ্দিন জানান, একজন প্রতিবন্ধিকে প্রতিষ্ঠিত করতে সহযোগিতার উদ্দেশ্যে ঋন দেয়া হয়েছে। ছাত্তার বিশ্বস্ততা অর্জন করায় অন্য সমিতি পাশে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে তাকে প্রতিষ্ঠিত করতে সরকারি সহযোগীতা প্রয়োজন।

 6,107 total views,  1 views today