কাবুল বিমানবন্দরে আত্মাঘাতি হামলায় ১২ জন মার্কিন সেনা সহ নিহত ৬০ জন,আহত ১৪০

এদিকে এই হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আইএসকে দোষারোপ করা হচ্ছে,পাশাপাশি শঙ্কা করা হচ্ছে আরও হামলার

 

 আন্তর্জাতিক ডেস্ক থেকে,কবির আহমেদঃ আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের হামিদ কারজাই বিমানবন্দর ও তার পাশে বৃহস্পতিবার জোড়া আত্মঘাতী বোমা হামলা হয়েছে। এই হামলায় কমপক্ষে ৬০ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও অনেকে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, এই হামলায় তাদের ১২ জন সেনা নিহত হয়েছেন। তার মধ্যে ১১ জন মেরিন সেনা এবং একজন নৌবাহিনীর ডাক্তার। আহত হয়েছেন আরও তিনজন। মার্কিন মুখপাত্র জন কিরবি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি এ হামলাকে ভয়াবহ বলে উল্লেখ করেছেন।

এদিকে বৃটিশ সংবাদ সংস্থা বিবিসি জানিয়েছেন, বিমানবন্দরের অ্যাবি গেট যেখানে মার্কিন এবং ব্রিটিশ সৈন্যরা অবস্থান নিয়ে হাজার হাজার মানুষকে আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছিল তার ঠিক বাইরে এই বিস্ফোরণ ঘটে।

কাবুলের ঊর্ধ্বতন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন , বিস্ফোরণে অন্তত ৬০ ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছে। আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৪০। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে বলে তালেবানের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পেন্টাগনের মুখপাত্র বলছেন, নিহতদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকসহ বেশ কিছু বেসামরিক মানুষ রয়েছেন। প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা  ৬ টায় বিমানবন্দরের কাছে ব্যারন হোটেলের সন্নিকটেই। এই হোটেলে যুক্তরাজ্যে যারা যেতে চাইছিলেন তাদের নথিপত্র ব্রিটিশ কর্মকর্তারা যাচাই বাছাই করছিলেন। প্রথম বিস্ফোরণের পর বন্দুকের গুলি হয় এবং এরপরই দ্বিতীয় বিস্ফোরণ হয় বিমানবন্দরের ঢোকার প্রধান একটি গেট – অ্যাবে গেটের কাছে।

আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের ২০ বছরের যুদ্ধের ইতিহাসে কোনো হামলায় সবচেয়ে বেশি সৈন্য নিহত হওয়ার ঘটনা এটি। এদিকে এই হামলার পেছনে ইসলামিক স্টেট তথা আইএস এর আফগান শাখা জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। হামলার পর পরই মার্কিন সেনারা বিমানবন্দর সিলগালা করে দিয়েছে। এর ফলে গেল দুই দশক ধরে যে ১০ হাজার আফগান যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে কাজ করেছেন তারা বিপাকে পড়েছেন।

এ বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড জেনারেল কেনেথ ফ্রাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি বলেছেন, ‘আসলে আমরা যখন হামলাকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি, তখন কিন্তু আরও হামলার আশঙ্কা রয়েছে এবং এই আশঙ্কা খুবই জোরালো। বিশেষ করে বিমানবন্দরের আশেপাশে। তবে সবাইকে নিশ্চিত করতে চাই যে, আমরা আমাদের নিরাপত্তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি আরও হামলা যাতে না হয়। কারণ, আমরা জানি তাদের আক্রমণের ধরন হলো, যখন একটি হামলা হয়, তখন আরও বেশ কয়েকটি হয়। সেটার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি। পাশাপাশি আমরা আমাদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও প্রস্তুত আছি।’

তিনি আরও জানিয়েছেন, পরবর্তী হামলা যেকোনো মুহূর্তে হতে পারে এবং সেটা যেকোনো জায়গায় হতে পারে। হতে পারে রকেট হামলা। হতে পারে গাড়ী বোমা হামলা কিংবা হতে পারে আত্মঘাতী বোমা হামলা।

 14,621 total views,  1 views today