কাতার বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশ

আন্তর্জাতিক মুদ্রা ডলারের জিডিপি-পিপিপি অনুযায়ী বিশ্বের ১৯১ টি দেশের মধ্যে ১৪৩ তম অবস্থানে আছে বাংলাদেশ
কবির আহমেদ, ভিয়েনাঃ বিভিন্ন দেশের ‘আন্তর্জাতিক ডলার’ বিবেচনায় নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ১০ দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত মাসিক ম্যাগাজিন ‘গ্লোবাল ফাইন্যান্স’৷ এক্ষেত্রে তারা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের তথ্য ব্যবহার করেছে ৷
নিম্নে পর্যায়ক্রমে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ১০ টি দেশের এবং সবচেয়ে গরীব দেশের আলোচনা করা হল:
গ্লোবাল ফাইন্যান্সের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশ মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতার এবং বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে গরীব দেশ বুরুন্ডি।
১. কাতার
কাতার বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে শীর্ষ ধনী দেশ৷ ‘আন্তর্জাতিক ডলার’ ১ লাখ ৩৮ হাজার ৯০০ ডলার৷ ২০ বছর ধরেই তারা শীর্ষ ধনী দেশের অবস্থান ধরে রেখেছে৷ কাতারের জনসংখ্যা মাত্র ২৮ লাখ ৷ ২০১৪ সালের পর থেকে কাতারের অধিবাসীর মাথাপিছু আয় প্রতিবছর কমছে ১৫ হাজার ডলার৷
২.ম্যাকাও
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশগুলোর তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছে চীনের প্রশাসনিক অঞ্চল ম্যাকাও৷ ‘আন্তর্জাতিক ডলার’ ১ লাখ ১৪ হাজার ৩৬২ ডলার৷ মাত্র ৬ লাখ অধিবাসীর এই অঞ্চলে ৪০টির বেশি ক্যাসিনো ক্লাব আছে৷ করোনার কারণে ক্যাসিনো বন্ধ ছিল,গত জুলাই মাস থেকে আবার খুলে দেওয়া হয়েছে৷
৩. লুক্সেমবার্গ
বিশ্বের ধনী দেশের তৃতীয় অবস্থানে আছে ইইউ দেশ লুক্সেমবার্গ।‘আন্তর্জাতিক ডলার’ ১ লাখ ১২ হাজার ডলার৷ ইউরোপের আরেক ট্যাক্স হ্যাভেন৷ সর্বোচ্চ মানের জীবনযাপনের দেশ লুক্সেমবার্গ৷ বাজেটের একটি বড় অংশ ব্যয় হয় আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষায়৷ ২০১৫ সালে প্রথম দেশটির মাথাপিছু আয় এক লাখ ডলার অতিক্রম করে৷ এমনকি করোনা মহামারিতে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তাদের আয় খুব একটা কমবে না৷ লুক্সেমবার্গ তার দেশের গণপরিবহনে যাতায়াত ফ্রি ঘোষণা করেছে সম্প্রতি।
৪. সিঙ্গাপুর
এশিয়ার অন্যতম করের স্বর্গরাজ্য বলা হয় দেশটিকে৷ ‘আন্তর্জাতিক ডলার’ ১ লাখ ৫ হাজার ৭০০ ডলার৷ ১৯৬৫ সালে স্বাধীন হওয়ার সময় দেশটির তেমন কিছুই ছিল না৷ কিন্তু কঠোর পরিশ্রম, স্মার্ট নীতি ও সঠিক নেতৃত্বের গুণে সিঙ্গাপুর এখন অন্যতম ধনী দেশ৷
৫. আয়ারল্যান্ড
‘আন্তর্জাতিক ডলার’ ৮৭ হাজার ডলার৷ করোনার আগে ব্রেক্সিট, বাণিজ্যযুদ্ধ, উদ্বাস্তুসহ নানা সমস্যায় যখন ইউরোপ ছিল জর্জরিত, তখনও আয়ারল্যান্ডের প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ শতাংশ, যেখানে ইউরোপের প্রবৃদ্ধি ছিল ১ দশমিক ২ শতাংশ৷

৬. ব্রুনেই দারুস সালাম
তেলসহ বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে দেশটির৷ ‘আন্তর্জাতিক ডলার’ ৮৫ হাজার ডলার৷ আয়ের বৈষম্য ও পুষ্টিহীনতাও প্রকট৷ সাড়ে চার লাখ অধিবাসীর এই দেশে ৪০ শতাংশের বেশি মানুষের আয় বছরে এক হাজার ডলারের কম৷
৭. নরওয়ে
‘আন্তর্জাতিক ডলার’ ৭৯ হাজার ৬০০ ডলার৷ ১৯৬০ সালে এখানে তেলের খনি আবিষ্কারের পর যত দিন পর্যন্ত জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছিল, তত দিন দেশটির সমৃদ্ধি কেবলই বেড়েছে৷ আয়ের বৈষম্যের দিক থেকে নরওয়ে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে৷
৮. সংযুক্ত আরব আমিরাত
করোনার কারণে এবার দুবাই ওয়ার্ল্ড এক্সপো করতে পারছে না, এটা একটা বড় ধাক্কা৷ এই এক্সপোতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আড়াই কোটি মানুষ অংশ নেন৷ ‘আন্তর্জাতিক ডলার’ ৭০ হাজার ৪০০ ডলার৷ তেল বিক্রি করে সবচেয়ে বেশি আয়৷ এছাড়া বাণিজ্য, নির্মাণ ও পর্যটন থেকে দেশটির আয় আছে৷
৯. কুয়েত
বিশ্বের মোট তেলের ৬ শতাংশই কুয়েতের৷ দেশটির বর্তমান ‘আন্তর্জাতিক ডলার’ ৬৭ হাজার ৯০০ ডলার৷ কুয়েতের মোট দেশজ উৎপাদন জিডিপির ৪০ শতাংশ আসে তেল থেকে, রপ্তানির ৯০ শতাংশই তেল৷
১০. সুইজারল্যান্ড
সুইজারল্যান্ডের বর্তমান ‘আন্তর্জাতিক ডলার’ ৬৭ হাজার ৬০০ ডলার৷ সে দেশে প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে ৯ হাজার ৪২৮ জনই মিলিওনেয়ার৷
সবচেয়ে গরিব দেশের তালিকায় রয়েছে: বুরুন্ডি (জিডিপি-পিপিপি ৭২৭ ডলার), সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক (৮২৩ ডলার), কঙ্গো (৮৪৯ ডলার), ইরিত্রিয়া (১০৬০ ডলার), নাইজার (১১০৬ ডলার), মালায়ি (১২৪০ ডলার), মোজাম্বিক (১৩০৩ ডলার), দক্ষিণ সুদান (১৬০২ ডলার) ও সিয়েরা লিওন (১৬৯০)৷
14,637 total views, 1 views today