দীর্ঘ ১০ বছর পর ইসরাইলের কোন প্রধানমন্ত্রীর প্রথম মিশর সফর

সরকারি সফরে মিশর গেলেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট
কবির আহমেদ, আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট মিশরের প্রেসিডেন্ট আস-সিসির আমন্ত্রণে গতকাল সোমবার এক সরকারী সফরে মিশরে আসেন। ২০১০ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু শেষবারের মত মিশর সফর করেছিলেন। মিশরই প্রথম আরব দেশ, যারা ১৯৭৯ সালে ইসরাইলের সঙ্গে শান্তি চুক্তিতে সই করে।
সংবাদ সংস্থার খবরে বলা হয়েছে, বর্তমান প্রতিবেশী দুই সরকার প্রধানের এই বৈঠকের প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও ফিলিস্তিনের সঙ্গে শান্তি প্রক্রিয়া। বেনেট বলেছেন মিশরের প্রেসিডেন্ট আল-সিসি ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় সাহায্য করতে পারেন। মিশর বলেছে, তারা আঞ্চলিক সুরক্ষা দৃঢ় করার কাজে সাহায্য করবে।
মিশরের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র বলেছেন, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে যেমন আলোচনা হয়েছে, তেমনই শান্তি প্রক্রিয়া নিয়েও কথা হয়েছে। ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলির মধ্যে শান্তি আলোচনার ক্ষেত্রে অতীতে মিশর সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে। গত মে মাসে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যে সংঘর্ষ বিরতি হয়েছে, সেটাও মিশরের মধ্যস্থতায় হয়েছে।
আল-সিসি-কে উদ্ধৃত করে মিশরের প্রেসিডেন্টের ওয়েবসাইট জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে সামগ্রিক শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে মিশর সবসময় কাজ করে যাবে। তারা ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের ক্ষেত্রে টু-স্টেট সমাধান চায়। তাহলে এই অঞ্চলে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসবে। ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে শান্তি প্রক্রিয়া এখন নানা বাধায় থমকে আছে। এই বৈঠকে সেই বাধা কাটানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
সোমবারই ইসরাইলের সেনা জানিয়েছিল, ফিলিস্তিন থেকে তিনটি আলাদা লঞ্চার থেকে ইসরাইলের দিকে রকেট ছোড়া হয়। রকেট হামলার জবাব দিতে ইসরাইলের সেনাবাহিনীও গাজায় হামাসের বিভিন্ন টার্গেটে আঘাত করে। বিমান থেকে বোমা ফেলা হয়। তবে হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায় নি।
এদিকে ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাপিদ রোববার বলেছেন, তিনি গাজায় পরিকাঠামোর উন্নতি চান এবং সেখানকার মানুষের জীবনধারণের মান বাড়াতে চান। তাহলেই হামাসের সঙ্গে সংঘাত এড়ানো যাবে। কিন্তু তিনি স্বীকার করেছেন, মিশরের সাহায্য ছাড়া এবং সবাইকে সঙ্গে করে না নিয়ে চললে এটা সম্ভব নয়। ২০০৭ থেকে মিশর সীমান্ত বন্ধ করে রাখার ক্ষেত্রে সাহায্য করছে, যাতে হামাসের হাতে বাইরে থেকে অস্ত্রশস্ত্র না আসে।
মিশর ছেড়ে আসার আগে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনেট বলেছেন, আলোচনায় কূটনীতি, নিরাপত্তা ও অর্থনীতির নানা বিষয় উঠে এসেছে। সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, আমরা এগিয়ে যাওয়ার জন্য একটি কাঠামো প্রতিষ্ঠা করলাম।বেনেট ও আল-সিসি মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব এবং লেবাননে আর্থিক সংকট নিয়েও কথা বলেছেন।
14,649 total views, 1 views today