ক্রোয়েশিয়ার জাগরেবে এক অস্ট্রিয়ান তার তিন অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানদের গলা টিপে হত্যা করেছে

জীবন যুদ্ধে পরাজিত বিপত্নিক অস্ট্রিয়ান সন্তানদের হত্যার পর বিষ পানে আত্মহত্যা চেষ্টায় ব্যর্থ হয়েছে

 কবির আহমেদ, ইউরোপ ডেস্কঃ ক্রোয়েশিয়ার রাজধানী জাগরেব থেকে ক্রোয়েশিয়ার সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, ৫৬ বছর বয়স্ক অস্ট্রিয়ান নাগরিক হারাল্ড কে ক্রোয়েশীয়ার রাজধানী জাগরেবের তার স্থায়ী ঠিকানায় তার তিন অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুকে হত্যা করেছে। অস্ট্রিয়ার জনপ্রিয় দৈনিক Kronen Zeitung  জানিয়েছেন তিনি একজন আর্থিক বিশেষজ্ঞ বা উপদেষ্টা। তার জন্ম অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায়।

আজ শনিবার ২৫ সেপ্টেম্বর সকালে প্রতিবেশীদের ফোন পেয়ে ক্রোয়েশিয়ান পুলিশ বাসায় এসে তাদের মরদেহ দেখতে পায়। চার বছর বয়সের শিশু ছেলের লাশ বেডরুমে ছিল এবং সাত বছরের যমজ একটি ছেলে এবং একটি মেয়ের মৃতদেহ লিভিং রুমে পাওয়া গিয়েছে।

জাগরেব পুলিশের জনৈক কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমকে জানান, জমজ ভাই-বোনের মৃতদেহের পাশেই তাদের খেলনাগুলি এলোমেলো ও বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল।

পরে প্রতিবেশীদের থেকে সংবাদ মাধ্যম জানতে পেরেছে বাচ্চাদের বাবা-মা আলাদা হয়ে গেছে এবং শিশুরা তাদের বাবার সাথে সপ্তাহান্তে থাকতে তাদের এই বাড়িতেই এসেছিল যেমনটি অতীতেও হয়ে ছিল।

প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় জাগরেব পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমকে বলা হয়েছ, নিজের হাতে শিশুদের শ্বাসরোধ করার পর সে বিষ বা অতিরিক্ত ঘুমের বড়ি খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে বাড়িতেই পেয়েছেন এবং সে সময় সে স্তম্ভিত ও অসাড় অবস্থায় ঘরের মেঝেতে পড়েছিল।পুলিশ এমবুলেন্সে করে তাকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছে।

পুলিশ আরও জানিয়েছে, নিহত শিশুদের মরদেহ তিনটি  জাগরেবের ফরসেনিক মেডিসিন এবং ফৌজদারি বিচার বিভাগে পাঠানো হয়েছে, যেখানে একটি ময়নাতদন্ত মৃত্যুর কারণ নির্ধারণ করবে। 

নিজের সন্তানদের হত্যার পর বিষ পান বা অতিরিক্ত ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়ার পূর্বে ঘাতক পিতা তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে সুইসাইড নোটে লিখেন, সে তার প্রাক্তন স্ত্রী এবং তার বর্তমান সঙ্গীর মধ্যে খারাপ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেছিলেন, যা তাকে এক বিরাট অর্থ সমস্যায় জর্জরিত করে দিয়েছে। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায়  লিখেছেন: “বিদায়! আমি যাবো কারণ আমি আর পারছি না। আমার জীবনের ভালবাসা আমাকে ছেড়ে চলে গেছে, কারণ আমার প্রাক্তন স্ত্রী তার কাছে খুব খারাপ ছিল এবং আমার কাছে টাকা ছিল না। গত দেড় বছর ধরে আমি অনেক চেষ্টা করেছি কিন্ত আমি আমার কাজ ফিরে পাইনি। এমনকি আমার মেসনিক ভাইরাও আমাকে সাহায্য করেনি, এমনকি ফোনও ধরেনি। শুধু আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু এবং ভাই আমাকে যতটা সম্ভব সাহায্য করেছিল। কিন্তু এখন আমি শেষ করেছি। তাই বিদায়”।

স্থানীয়দের উদ্ধৃতি দিয়ে ক্রোয়েশিয়ার রাজধানী জাগরেবের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছেন, ঘাতক পিতা একজন অভিজ্ঞ আর্থিক উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি ড্যানিউব ইউনিভার্সিটি ক্রেমসের(Krems, NÖ) স্নাতক এবং মাস্টার অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এমবিএ) ডিগ্রিধারী। তিনি বেশ কয়েকটি অস্ট্রিয়ান লিজিং কোম্পানিতে কাজ করেছেন কিন্তু ব্যবস্থাপনা পদেও রবার্ট বশ এজি, আলকাটেল এজি এবং আরও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের চাকরী করেছেন ।

 14,690 total views,  1 views today