আফগানিস্তানের তালেবানের প্রতি তুরস্কের কড়া বার্তা

“নারীর অংশগ্রহণ না থাকলে তালেবান সরকারকে সহযোগিতা করবে না তুরস্ক” – প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান


 কবির আহমেদ, আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
সরকারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত না করলে আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে কোনো সহযোগিতা দেবে না তুরস্ক। আমেরিকান বাণিজ্যিক টেলিভিশন নেটওয়ার্ক সিবিএসকে (CBS) দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, কাবুল বিমানবন্দর পরিচালনায় কোনো চুক্তিতে যাওয়ার আগে তালেবান সরকারকে আরও বেশি অন্তর্ভূক্তি মূলক হতে হবে। গত আগস্ট মাসে কাবুল বিমানবন্দর পরিচালনায় তালেবানকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছিল তুরস্ক।

তুর্কী সরকার প্রধান সিবিএসকে আরও জানান, ‘আফগানিস্তানের সরকার অন্তর্ভূক্তিমূলক নয়, এতে বিভিন্ন গোষ্ঠীকে গ্রহণ করা হচ্ছে না। এই বিষয়টি নিয়ে যতদিন প্রশ্ন থাকবে ততদিন আমরা আফগানিস্তানের সাথে কোন সহযোগিতায় যাবো না। তবে তাদের সরকার যদি আরও অন্তর্ভূক্তিমূলক হয়, তাহলে তুর্কী হিসেবে আমরা আফগানিস্তানের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিব।

তিনি অত্যন্ত গুরুত্বারোপ করেছেন বলেন, আমরা আফগানিস্তানে অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রত্যাশা করি। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যখন নারীরা সক্রিয় হবে তখন আমরা তাদের সহযোগিতা করতে পারব,অন্যথায় না।

এদিকে কাতার ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ নেটওয়ার্ক আলা জাজিরা বলেন,তালেবানের প্রস্তাবিত সরকারকে ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক’ নয় বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান।  তিনি বলেছেন, কেবল অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন করলেই তুরস্ক আফগানিস্তানের সঙ্গে কাজ করতে রাজি আছে। 

জাতিসংঘের ৭৬ তম সাধারণ পরিষদে এক সভাশেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে তালেবান ইস্যুতে আলাপকালে এই শর্তের কথা জানান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট। 

তালেবান আফগানিস্তান দখলে নেওয়ার পর সে দেশ থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করে নেন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশিরা। এর পর কাবুল বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সচল করতে কাতারের সঙ্গে কাজ করছে ন্যাটোর সদস্য তুরস্ক। কাবুল দখলে নেওয়ার পর সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় তালেবানের ঘোষণাকে স্বাগত জানায় তুরস্ক।  সেই সঙ্গে তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়া ও প্রস্তাবিত সরকারের সঙ্গে কাজ করার বিষয়টি বিবেচনায় রেখেছে তুরস্ক।

এরদোগান আরও বলেন, কাবুলে অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা হয়নি। এখন কিছু পরিবর্তনের সম্ভাবনা সম্পর্কে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। তালেবান হয়তো অধিক অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন করবে।এরদোগান জানান, যদিও এমন পরিবর্তন তারা এখনও দেখতে পাননি, তবে তালেবান এমন পদক্ষেপ নিলে তারা হয়তো তাদের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে অগ্রসর হবেন।

সম্প্রতি তালেবানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন আফগানিস্তানে নিযুক্ত তুর্কি রাষ্ট্রদূত সিহাদ এরগিনে। এই সাক্ষাতের পরই এরদোগানের কাছ থেকে তালেবান সরকার সম্পর্কে মন্তব্য এলো।

যদিও ওই সাক্ষাতের পর তুরস্কের রাষ্ট্রদূত এক টুইটবার্তায় বলেছিলেন, আফগান জনগণের প্রতি তুরস্কের অব্যাহত সমর্থনের ব্যাপারে তিনি অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। পাশাপাশি দেশটির সঙ্গে ঐতিহাসিক সম্পর্ক গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছেন।

 14,614 total views,  1 views today