অস্ট্রিয়ার দৈনিক পত্রিকা “ÖSTERREICH” রাস্ট্রের বিরুদ্ধে মামলা করেছে

“ÖSTERREICH” মিডিয়া গ্রুপ বাড়ি তল্লাশি এবং কথিত সেল ফোন নজরদারির জন্য মিলিয়ন ইউরোর ক্ষতিপূরণ দাবী
কবির আহমেদ, ইউরোপ ডেস্কঃ অস্ট্রিয়ান সংবাদ সংস্থা এপিএ জানিয়েছেন দেশের প্রকাশনা গোষ্ঠী “ÖSTERREICH” অস্ট্রিয়া প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বাড়ি অনুসন্ধান ও ক্ষতিপূরণের (মানহানির) মামলা করেছে।
উল্লেখ্য অস্ট্রিয়ার বিচার বিভাগের দুর্নীতি দমন কমিশন (WKStA) উক্ত মিডিয়ার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের শেষের দিকে রাস্ট্রের অর্থের বিনিময়ে (ঘুষ) অস্ট্রিয়ার সদ্য সাবেক সরকার প্রধান সেবাস্তিয়ান কুর্জের (ÖVP) নির্বাচনী প্রচারণায় সহযোগিতার অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অস্ট্রিয়ান সংবাদ সংস্থা এপিএ আরও জানিয়েছেন, এপিএ এর কাছেও পাঠানো এক বিবৃতিতে উক্ত মিডিয়া গ্রুপ জানান, অস্ট্রিয়ার বিচার বিভাগের দুর্নীতি প্রসিকিউটর অফিসের (WKStA) পক্ষ থেকে ÖSTERREICH মিডিয়া অফিসের বাড়ি অনুসন্ধান ও কথিত সেল ফোন নজরদারি অবৈধ ছিল।উক্ত মিডিয়া কোম্পানি সুপ্রিম কোর্টের আইনি সুরক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আরোপিত এই মানহানি মামলার ব্যাপারে এপিএকে বিস্তারিত অবহিত করেন।
ÖSTERREICH মিডিয়া এটিকে ভিয়েনায় সরকারের বিচার বিভাগের একটি কেলেঙ্কারি হিসাবে বর্ণনা করেছে।মিডিয়ার আইনজীবী জর্জ জ্যাঙ্গার অস্ট্রিয়ান সরকারের বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে মামলার দায়ের করার পর এপিএ-কে বলেন WKStA এর ÖSTERREICH মিডিয়ার উপর অনুসন্ধানের নামে রাস্ট্রের একটি ভুল ও কেলেঙ্কারি হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন।তিনি জানান, বিচার বিভাগের এই অন্যায় অভিযানের বিরুদ্ধে একটি মামলা এবং প্রতিষ্ঠিত ও জনপ্রিয় একটি গণমাধ্যমের মানহানির বা ক্ষতিপূরণের জন্য প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি “মিলিয়ন ডলারের মামলাও” দায়ের করা হয়েছে।
ÖSTERREICH মিডিয়া আরও জানান, বিচারমন্ত্রী আলমা জাদিক (গ্রিনস) কে অবিলম্বে এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সেলফোন নজরদারি এবং বাড়িতে অভিযান নজরদারির জন্য নির্ধারিত সেল ফোনের মধ্যে দৈনিক পত্রিকার তিনটি ফোন ছিল, “যা স্পষ্টভাবে সম্পাদকীয় গোপনীয়তার অধীন এবং – ইইউ আইন এবং মানবাধিকার সম্মেলনের সমস্ত নিয়ম অনুযায়ী – নজরদারি করা যাবে না,” বলে অস্ট্রিয়া প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে মামলায় আইনজীবী তা উল্লেখ করেছেন।এই কারণে নজরদারির আগে পাবলিক প্রসিকিউটরদের সুপ্রিম কোর্টের আইনি সুরক্ষা কর্মকর্তার কাছ থেকে অনুমোদন নেওয়া উচিত ছিল।
মিডিয়ার পক্ষ থেকে এপিএকে আরও বলা হয়েছে, বিচার বিভাগের দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তকারীরা এই ধরনের অনুমোদন পেয়েছেন বলে বলা হয় – কিন্তু শুধুমাত্র পরে এবং খুব দেরিতে। সংবাদপত্রের খবরে বলা হয়েছে যে, ব্যবস্থাগুলি একটি কথিত প্রত্যাখ্যান কেবল বাড়ি অনুসন্ধানের সময় এসেছিল।
মামলা দায়েরের পর WKStA একটি লিখিত বিবৃতিতে “Österreich” থেকে প্রাপ্ত তথ্যের বিরোধিতা করেছে। ভিয়েনার আঞ্চলিক আদালতের উপযুক্ত আটক এবং আইনী সুরক্ষা বিচারক কর্তৃক অনুমোদিত একটি অনুসন্ধান আদেশের ভিত্তিতে সমস্ত বাড়ি অনুসন্ধান করা হয়েছিল। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “ব্যবস্থাপনা এবং বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে সাংবিধানিকভাবে সুরক্ষিত সম্পাদকীয় গোপনীয়তা অনুসারে অনুসন্ধানগুলি পরিচালিত হয়েছিল, তবে মিডিয়া কোম্পানির প্রাঙ্গনে বিশেষভাবে সম্পাদকীয় ক্রিয়াকলাপের জন্য ব্যবহৃত হয়নি।”
ডব্লিউকেএসটিএর তথ্য অনুসারে, আদালত অনুসন্ধানের একযোগে সম্পাদনের সমন্বয় করার জন্য অনলাইন দিকনির্দেশের সন্ধানের অনুমোদন দিয়েছে। সাংবাদিকদের অবস্থানের এই মূল্যায়নের জন্য বিচার বিভাগের আইনি সুরক্ষা কর্মকর্তার অনুমোদনও প্রয়োজন। “যেহেতু আদালত অনুমতি দিয়েছে, কিন্তু আইনি সুরক্ষা কর্মকর্তার অনুমোদন পাওয়া যায়নি, সাংবাদিকদের মূল্যায়ন করা হয়নি”।এই সত্যটি মিডিয়া কোম্পানির আইনি প্রতিনিধিদের কাছে ফাইল পরিদর্শন থেকেও জানা যায়।
এদিকে আজ অস্ট্রিয়ায় নতুন করে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত হয়েছেন ১,৬৭৫ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ৬ জন।রাজধানী ভিয়েনায় আজ নতুন করে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত হয়েছেন ৩৬৬ জন।
অস্ট্রিয়ার অন্যান্য রাজ্যের মধ্যে Oberösterreich(OÖ) রাজ্যে ৩৬০ জন, Steiermark রাজ্যে ২৯০ জন, Niederösterreich (NÖ) রাজ্যে ২৭৬ জন, Salzburg রাজ্যে ১১১ জন, Kärnten রাজ্যে ১০১ জন, Tirol রাজ্যে ৯৬ জন Burgenland রাজ্যে ৪৮ জন এবং Vorarlberg রাজ্যে ২৭ জন নতুন করে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত হয়েছেন।
অস্ট্রিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে আজ সমগ্র দেশে করোনার প্রতিষেধক টিকা দেয়া হয়েছে মাত্র ৭,২৪৬ ডোজ। এই পর্যন্ত করোনার প্রতিষেধক টিকার ডোজ দেয়া হয়েছে ১,০৯,৪৮,১১১ ডোজ। অস্ট্রিয়ায় এই পর্যন্ত করোনার প্রতিষেধক টিকার সম্পূর্ণ ডোজ গ্রহণ করেছেন মোট ৫৪ লাখ ৭৭ হাজার ৮৩৪ জন, যা দেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা ৬১,৩ শতাংশ।
অস্ট্রিয়ায় এই পর্যন্ত করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৭,৬১,২১৮ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১১,০৯৬ জন।করোনার থেকে আরোগ্য লাভ করেছেন ৭,৩০,০২০ জন। বর্তমানে করোনার সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ২০,১০২ জন।এর মধ্যে আইসিইউতে আছেন ২২৪ জন এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৮২৫ জন। বাকীরা নিজ নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন।
14,640 total views, 1 views today