ভিয়েনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপিত

নিউজ ডেস্কঃ ভিয়েনাস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্থায়ী মিশন যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দ্বীপনা এবং নানাবিধ কর্মসূচির মাধ্যমে আজ মহান বিজয় দিবস ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উদযাপন করেছে।
সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে অস্ট্রিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত কর্তৃক জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়। পরে তিনি দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তাদের নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন।
অস্ট্রিয়ায় করোনা পরিস্থিতিতে অস্ট্রিয়া সরকার কর্তৃক আরোপিত বিভিন্ন বিধিনিষেধ ও নির্দেশনা মেনে দূতাবাস কর্তৃক বিকালে মহান বিজয় দিবস ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে একটি অনলাইন আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানটি শুরু হয়।
প্রথমেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাঁর পরিবারের সকল শহীদ, জাতীয় চার নেতা, ও মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদদের সম্মানে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ ও প্রচার করা হয়।
করোনা পরিস্থিতির কারণে অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি ও স্লোভেনিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশিগণ অনলাইনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বিজয় দিবসের তাৎপর্য নিয়ে বিশেষ আলোচনায় যোগদান করেন।

মহান বিজয় দিবস ও স্বাধীনতার ৫০ বছর উপলক্ষ্যে বিশেষ আলোচনায় বক্তাগণ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।তাঁরা স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতার দূরদর্শী নেতৃত্ব, দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তি সংগ্রাম, স্বাধীনতা-উত্তর দেশ গঠনে বঙ্গবন্ধুর অবদান ও স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে বঙ্গবন্ধু কর্তৃক গৃহীত দূরদর্শী নানা নীতি সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করেন।তাঁরা বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন।তাঁরা বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ধর্মনিরপেক্ষতা অক্ষুন্ন রাখা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঠিক বাস্তবায়নের উপর আলোকপাত করেন।
রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি তাঁর বক্তব্যে জাতির পিতা, মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদ, সম্ভ্রমহারা মা-বোন ও নয় মাস ব্যাপী যুদ্ধে ত্যাগস্বীকারকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সশ্রদ্ধ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।তিনি স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনবদ্য অবদান তুলে ধরেন।তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে করোনা মহামারীর মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে পদ্মা সেতু, কর্ণফুলি টানেল, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণসহ বর্তমান সরকারের নানা উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের তাত্পর্য সম্পর্কে আলোচনা করেন। তিনি কোভিড-১৯ মোকাবেলায় সরকারের সাফল্য ও করোনার টিকা সংগ্রহে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরেন।তিনি ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বৈশ্বিক আলোচনায় নেতৃত্ব প্রদান, নারীর ক্ষমতায়ন প্রভৃতি ক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনবদ্য অবদানের উল্লেখ করেন।
রাষ্ট্রদূত স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের শপথের উল্লেখ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে উন্নত, সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া ও স্লোভেনিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের এই মহামারির সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ প্রদান করেন।
আলোচনা সভা শেষে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সকল শহীদ, জাতীয় চার নেতা ও মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদদের আত্মার মাগফিরাত এবং দেশের অব্যাহত শান্তি-সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
15,738 total views, 1 views today