অস্ট্রিয়া হাঙ্গেরি সীমান্তে, অস্ট্রিয়ান সেনা সদস্যকে লক্ষ্য গুলি করে গুলিবর্ষন

একজন পাচারকারী সহ ১২ জন অভিবাসন প্রত্যাশীকে গ্রেফতার করা হয়েছ, অবশ্য গুলিবর্ষনে কোন সৈনিক আহত হন নি।
কবির আহমেদ,ইউরোপ ডেস্কঃ অস্ট্রিয়ার জনপ্রিয় দৈনিক পত্রিকা Kronen Zeitung জানিয়েছে আজ সোমবার অতি প্রত্যুষে হাঙ্গেরিয়ান সীমান্তে গুরুতর ঘটনা ঘটেছে। হাঙ্গেরির সীমান্ত দিয়ে একটি মাঝারি আকৃতির মাইক্রোকে নিয়মিত চেক আপের জন্য সীমান্ত সৈন্যরা থামতে সঙ্কেত দিলে গাড়ির চালক সৈন্যদের নির্দেশ অমান্য করে অতি দ্রুত অস্ট্রিয়ার ভিতরে প্রবেশ করে।
অভিবাসন প্রত্যাশীদের বহনকারী মাইক্রোটি অস্ট্রিয়ার পূর্বের বুর্গেনল্যান্ড রাজ্যের হাঙ্গেরির সীমান্তে সৈন্যদের একটি নিয়ন্ত্রণ ব্যারিকেড ভেঙ্গে এলোমেলো ভাবে দ্রুত গতিতে চললেও সৈন্যরা পিছু নিলে কিছুদূর চেয়ে চালক গাড়ি থামিয়ে সৈন্যদের উপর গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে হাঙ্গেরির দিকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। মানব পাচারকারী এই চোরাকারবারী চালাকের গুলিবর্ষনে অবশ্য অস্ট্রিয়ান কোন সেনা সদস্য আহত হন নি।
অস্ট্রিয়ান সেনাবাহিনীর বুর্গেনল্যান্ড সীমান্তের কমান্ডার কর্নেল মাইকেল বাউয়ার তাত্ক্ষণিক এক সাক্ষাৎকারে দৈনিক পত্রিকাটির স্থানীয় সংবাদদাতাকে জানান, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বহনকারী মাইক্রোর সশস্ত্র প্রধান চালক পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। চোরাকারবারি প্রথমে একটি মাঠের মধ্যে চলে যায় এবং তারপর বেশ কয়েকজন অভিবাসীকে নিয়ে গাড়ি থেকে লাফ দেয়। “হাঙ্গেরির দিকে ফিরে আসার সময়, টাগবোটটি আমাদের সহকারী সৈন্যদের উপর গুলি চালায়।” “সৌভাগ্যবশত, গুলিতে আমাদের কোনো সৈন্য আহত হয়নি।”

এদিকে বুর্গেনল্যান্ড রাজ্যের পুলিশ জানিয়েছে, দ্বিতীয় সন্দেহভাজন পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বারোজন উদ্বাস্তু যারা ভ্যানে ছিল তারাও অক্ষত ছিল, এবং লোকেরা আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছে। “আজকের এই ঘটনা এটা স্পষ্ট করে যে পাচারকারীরা আবারও নতুন উদ্যমে অস্ট্রিয়া তথা ইইউতে অবৈধ মানুষ পাচারের কাজ শুরু করেছে।”
অস্ট্রিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্লাউডিয়া ট্যানার (ÖVP) একটি সম্প্রচার কেন্দ্রে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমি আনন্দিত যে নিয়োজিত সৈন্যরা গুলি বিনিময়ে আহত হয়নি। তিনি আরও জানান, অস্ট্রিয়ান সীমান্তে বর্তমানে উচ্চ হুমকির সম্ভাবনার কারণে, ফেডারেল সেনাবাহিনীর সৈন্যরা এই ধরনের ঘটনার জন্য বুলেটপ্রুফ ভেস্টে সজ্জিত অবস্থায় কর্তব্যরত আছেন।
আজকের এই ঘটনার পর বুর্গেনল্যান্ড রাজ্যের গভর্নর হ্যান্স পিটার ডসকোজিল (SPÖ) উদ্বেগ প্রকাশ করে একট বিবৃতিতে বলেন, “আমি হতবাক এবং উদ্বিগ্ন হয়েছি, এই আক্রমণটি দেখায় যে, আন্তর্জাতিক পাচার অপরাধ কতটা অমানবিক এবং সেখানে আর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।” আন্তর্জাতিক মানব চোরাচালান বৃদ্ধির জন্য নতুন রাজনৈতিক সমাধানেরও প্রয়োজন : “ইউরোপের বাইরে প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রগুলিতে আশ্রয়ের পদ্ধতির আউটসোর্সিং এই অত্যন্ত লাভজনক অপরাধের ‘ব্যবসায়িক মডেল’কে টেনে আনবে”।
14,814 total views, 1 views today