বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে আগ্রহী অস্ট্রিয়া
বাংলাদেশকে এই পর্যন্ত অস্ট্রিয়ার ১৫ লাখ অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার প্রতিষেধক টিকা বা ভ্যাকসিন উপহার, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন
কবির আহমেদ, ইউরোপ ডেস্কঃ অস্ট্রিয়ার সরকার প্রধান চ্যান্সেলর কার্ল নেহামার বাংলাদেশের উন্নয়নে অংশীদার হতে চায় এবং তার সাথে সাথে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায়। বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত ইংরেজী দৈনিক The Business Standard পত্রিকা জানায়,অস্ট্রিয়ার সরকার প্রধান চ্যান্সেলর কার্ল নেহামার(ÖVP) গতকাল শুক্রবার(৫ ফেব্রুয়ারী) দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ সময় বিকাল চারটার দিকে ফোন করার সময় তার দেশের আগ্রহের কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বাংলাদেশের সংবাদ সংস্থা ইউএনবিকে বলেন, “অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর কার্ল নেহামার বিকেল ৪টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করেন এবং ১০ মিনিট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।”
তিনি বলেন, উন্নয়ন সহযোগীর বিষয়টি এবং অস্ট্রিয়ার সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের উপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য অস্ট্রিয়ার সরকার প্রধান চ্যান্সেলর কার্ল নেহামারের প্রতি আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান বিনিয়োগের জন্য খুবই উপযোগী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর কার্ল নেহামারকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ সফরের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী চ্যান্সেলর কার্ল নেহামারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশকে উপহার হিসাবে প্রায় ১৫ লাখ করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব ইহসানুল করিম আরও বলেন,অস্ট্রিয়ার সরকার প্রধান চ্যান্সেলর কার্ল নেহামার বলেছেন যে, ভবিষ্যতে বাংলাদেশের প্রয়োজন হলে তার দেশ আরও ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে প্রস্তুত আছে।
উল্লেখ্য যে, গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর অস্ট্রিয়ান সংবাদ সংস্থা এপিএ জানিয়েছিল যে, অস্ট্রিয়া বাংলাদেশকে ১০ লাখ করোনার ভ্যাকসিন ডোজ দিয়েছে। অস্ট্রিয়া বাংলাদেশকে উপহার হিসাবে দিয়েছিল অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন। এপিএ সে সময় আরও জানিয়েছিল,অস্ট্রিয়াতে AstraZeneca ভ্যাকসিনের চাহিদা কমে যাওয়ায়,ভ্যাকসিনের মেয়াদের কথা চিন্তা করে তা দ্রুত দরিদ্র বিভিন্ন দেশে দান করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তীতে অস্ট্রিয়া বাংলাদেশকে আরও পাঁচ লাখ অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন দিয়েছেন।
এখানে আরও উল্লেখ্য যে,২০১৬ সাল থেকে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্থায়ী মিশন স্থাপিত হওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দিনের পর দিন ক্রমশ আরও উত্তরোত্তর জোরদার হচ্ছে। বাংলাদেশের সাথে অস্ট্রিয়ার ইতিমধ্যেই বিমান পরিষেবা চুক্তি(এসেএ) স্বাক্ষরিত হয়েছে।
গত বছর ২০২১ সালের ৭ জুন অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্থায়ী মিশনে অস্ট্রিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাস্ট্রদূত ও স্থায়ী মিশন প্রধান রাস্ট্রদূত মুহাম্মদ আবদুল মুহিত এবং অস্ট্রিয়ান ইউরোপীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের রাস্ট্রদূত আন্দ্রেয়াস রিয়েকেন স্ব স্ব দেশের পক্ষে বিমান পরিষেবা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন।
বাংলাদেশ ও অস্ট্রিয়ার মধ্যকার এই বিমান পরিষেবা চুক্তির ফলে তখনই আশা করা হয়েছিল যে,বিমান পরিষেবা চুক্তি দু’দেশের মধ্যে শুধুমাত্র বিমান চলাচলকেই উৎসাহিত করবে না বরঞ্চ এর পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা- বাণিজ্য ও জনগণের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও আন্তরিকতা বৃদ্ধি করবে।
15,740 total views, 1 views today