অস্ট্রিয়া অব্যাহত করোনার সংক্রমণের অতি ঝুঁকিপূর্ণ লাল জোনে

এক সপ্তাহের সেমিস্টার ছুটির পর সোমবার থেকে সংক্রমণের বিস্তারের এই ঊর্ধ্বগতির মধ্যেই স্কুল খুলছে
কবির আহমেদ, ইউরোপ ডেস্কঃ অস্ট্রিয়ান সংবাদ সংস্থা এপিএ জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে অস্ট্রিয়ার করোনার ট্রাফিক লাইট কমিশনের কোনো বাস্তব বৈঠক নেই। স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ডাটা ব্যবহার করে বৃহস্পতিবার সার্কুলার ভোটের মাধ্যমে রঙের স্কিম নির্ধারণ করেছে করোনার ট্র্যাফিক লাইট কমিশন।
আজ বৃহস্পতিবার ১০ ফেব্রুয়ারী অস্ট্রিয়ার করোনার ট্র্যাফিক লাইট কমিশন সংক্রমণের বিস্তারের ডাটার উপর ভিত্তি করেই অস্ট্রিয়াকে করোনার নতুন সংক্রমণ বিস্তারের জন্য অতি ঝুঁকিপূর্ণ লাল জোনেই রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে একটি ভাল খবরও রয়েছে। ট্র্যাফিক লাইট কমিশনের তথ্য অনুসারে সংক্রমণের বিস্তার অব্যাহত থাকলেও গত ১৪ দিনে বিভিন্ন ফেডারেল রাজ্যে সংক্রমণের বিস্তার কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। অস্ট্রিয়ার পশ্চিমের রাজ্য সমূহের বিভিন্ন জেলায় ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে।
করোনা কমিশনের কার্যকারী নথি থেকে দেখা যায় – এপিএ-র কাছে উপলব্ধ – ঝুঁকি নম্বর, যা ট্র্যাফিক লাইটের রঙের জন্য দায়ী এবং এতে টিকা দেওয়ার অবস্থা এবং সংক্রামিতদের বয়সের মতো কারণগুলিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। Vorarlberg রাজ্যে আগের সপ্তাহের পরিমাপের তুলনায়,অন্য সব জায়গায় সংক্রমণের বিস্তার এখনও উপরে উঠছে কিন্তু শুধুমাত্র Kärnten রাজ্যে কিছুটা স্থিতিশীল অবস্থায় আছে।
ফেডারেল রাজধানী ভিয়েনাতে এখনও সংক্রমণের বিস্তার সবচেয়ে ভালো ঝুঁকির মধ্যেই রয়েছে। ভিয়েনায় গত এক সপ্তাহে প্রতি এক লাখ জনপদে এখনও করোনায় সংক্রামিত শনাক্ত প্রায় ১,১৪৪ জন। অস্ট্রিয়ার ফেডারেল রাজ্য সমূহের মধ্যে সবচেয়ে বেশী রয়েছে Tirol রাজ্যে ৪,৭৯৩ জন। অবশ্য অস্ট্রিয়াতে বর্তমানে বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের পঞ্চম ওমিক্রন প্রাদুর্ভাব অনেকটাই হালকা সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের মত হওয়ায় হাসপাতালে তেমন একটা চাপ নেই। আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশ রোগীই নিজ বাড়িতেই দুই তিনদিনেই আরোগ্য লাভ করছে।
রাজধানী ভিয়েনার স্বাস্থ্য প্রশাসন জানিয়েছে, ফেডারেল রাজধানীতে শতকরা ৩৫ শতাংশ রোগীই উপসর্গবিহীন। আর সমগ্র দেশে এই উপসর্গবিহীন রোগীর সংখ্যা শতকরা ২৬ শতাংশ। করোনার বিধিনিষেধের ফলে লোকজন বাধ্যতামূলক পিসিআর পরীক্ষার ফলেই পজিটিভ শনাক্ত হচ্ছেন। তাই আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ শিথিলকরণের কিছু অংশে ভিয়েনা রাজ্য অংশগ্রহণ করছে না।
এদিকে আজ অস্ট্রিয়ায় নতুন করে করোনায় সংক্রামিত শনাক্ত হয়েছেন ৩৫,২৫০ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ২২ জন। রাজধানী ভিয়েনায় আজ নতুন করে করোনায় সংক্রামিত শনাক্ত হয়েছেন ৬,১৫৮ জন।
অন্যান্য ফেডারেল রাজ্যের মধ্যে OÖ রাজ্যে ৬,৮১০ জন, NÖ রাজ্যে ৫,৪৩৯ জন, Steiermark রাজ্যে ৫,২৯৭ জন, Kärnten রাজ্যে ৩,১৯৩ জন,Tirol রাজ্যে ২,৮২৪ জন, Salzburg রাজ্যে ২,৩৫৫ জন, Vorarlberg রাজ্যে ২,২৩৬ জন এবং Burgenland রাজ্যে ৯৩৮ জন নতুন করে করোনায় সংক্রামিত শনাক্ত হয়েছেন।
অস্ট্রিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী আজ সমগ্র অস্ট্রিয়াতে করোনার প্রতিষেধক টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ১,৪৫৪ জন এবং করোনার প্রতিষেধক টিকার বুস্টার ডোজ গ্রহণ সম্পন্ন করেছেন ১১,৩৯২ জন। অস্ট্রিয়ায় বর্তমানে করোনার প্রতিষেধক টিকার বৈধ সনদ প্রাপ্তের সংখ্যা ৬২,০৮,০২২ জন,যা দেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা ৬৯,৫ শতাংশ।
অস্ট্রিয়ায় এই পর্যন্ত করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২১,৮৪,৮৭৩ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন মোট ১৪,৩১৫ জন। করোনার থেকে এই পর্যন্ত আরোগ্য লাভ করেছেন মোট ১৮,২৮,৪৪৪ জন। বর্তমানে করোনার সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৩,৪২,১১৪ জন। এর মধ্যে আইসিইউতে আছেন ১৯১ জন এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ২,০৬৪ জন। বাকীরা নিজ নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন।
14,854 total views, 1 views today