মৃত্যুর মিছিল সহ্য না করতে পেরে নিউইয়র্কের টপ ইমার্জেন্সি নারী চিকিৎসকের আত্মহত্যা

অন লাইন ডেস্ক থেকে, কবির আহমেদঃ নিউইয়র্কে করোনাভাইরাসে নিজ চোখের সামনে মৃত্যুর মিছিল দেখে অনেকই সামাল দিতে পারছেন না। এর মধ্যেই আত্মহত্যা করেছেন জরুরি বিভাগের একজন ডাক্তার। মাথায় গুলি চালিয়ে মৃত্যুর মিছিল দেখার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি চেয়েছেন ইমার্জেন্সি সার্ভিসের আরেক কর্মী।                                                      

নিউইয়র্ক প্রেসপেটেরিয়ান হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগের ডাক্তার ছিলেন লরনা ব্রীন। নিউইয়র্কে করোনা ছড়িয়ে পড়লে নগরীর হাসপাতালগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। একদিকে রোগী জরুরি বিভাগে ভর্তি হচ্ছে আর মারা যাচ্ছে। হাসপাতালে রোগী রাখার জয়াগা পর্যন্ত ছিল না, ভেন্টিলেশনেরও অভাব। মরদেহ দেখতে হয়েছে একের পর এক। বিশ্বের সবচেয়ে ভালো চিকিৎসার নগরী হিসেবে খ্যাত নিউইয়র্কের চিকিৎসকরাই হঠাৎ দেখতে পান নিজেদের অসহায়ত্ব। শুরুতে ব্যক্তিগত সুরক্ষারও অভাব ছিল। ছিল না আগাম কোন প্রস্তুতি। বেশিরভাগ চিকিৎসক নিজের অজান্তেই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মারাও গেছেন অনেক।                       

ডা. লরনা ব্রীন চিকিৎসা দিতে দিতেই নিজে অসুস্থ হয়ে পড়েন। কাজ বন্ধ করে নিজের ঘরে সুস্থ হয়ে উঠে আবার কাজে ফিরে যান নিজের পেশার দায়িত্বের জায়গা থেকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে বাসায় ফেরত পাঠায় আরও কিছুদিন বিশ্রামের জন্য। পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁকে ভার্জিনিয়ায় নিকটাত্মীয়ের কাছে রাখা হয়।                                       

২৪ এপ্রিল রবিবার ডা. লরনা ব্রীন আত্মহত্যা করেন। পরিবারের পক্ষ থেকে বিস্তারিত না জানিয়ে বলা হয়েছে ডা. ব্রীন বারবারই করোনায় মানুষের মৃত্যু নিয়ে কথা বলছিলেন। হাসপাতালে এসেই অনেকে মৃত্যুর কোলে ঝরে পড়ছে বলে বিমর্ষ লরনা ব্রীন বলছিলেন। তাঁর বাবা ডা. ফিলিপ ব্রীন বলেছেন , মেয়েটি এত মৃত্যুর ঘটনা মেনে নিতে পারছিল না। বাবা বলেছেন, করোনা যোদ্ধার সামনের সারির যোদ্ধার তালিকায় যেন ৪৯ বয়সের লরনা ব্রীনকে স্মরণ করা হয়।                                                                                                                                                                                              এর আগে শুক্রবারে নগরীর এস্টোরিয়া এলাকায় ইমার্জেন্সি সার্ভিসে কর্মরত প্যারামেডিক জন মনডেলো (২৩) নিজের বাবা পুলিশ অফিসারের পিস্তল মাথায় ঠেকিয়ে আত্মহত্যা করেন। গত দুই মাসে নগরীর সবচেয়ে বেশী আক্রান্ত ব্রঙ্কস এলাকার ক্লার্মন্টে ইমার্জেন্সি স্টেশন কাজ করেছেন তিনি। পুলিশ বলেছে, এত মৃত্যু দৃশ্য একসাথে দেখে মানসিকভাবে সামাল দিতে পারেননি মনডেলো।

 5,378 total views,  1 views today