নিউইয়র্কে করোনায় আক্রান্ত বাংলাদেশী মহিলা তাসনিমের ভেন্টিলেটরে কন্যাসন্তান প্রসব

  অন লাইন ডেস্ক থেকে,কবির আহমেদঃ করোনায় একদিকে গোটা বিশ্ব যখন বিপর্যস্ত ও মৃত্যু আতঙ্কে মানুষের দিন কাটছে ঠিক এই মহামারির সময় কিছু কিছু অবিশ্বাস্য ঘটনাও ঘটছে। নিউইয়র্ক নগরীর ব্রুকলিনে বসবাসকারী বাংলাদেশি তাসনিম শাহীন এমনি এক অবিশ্বাস্য ঘটনা রচিত করলেন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে তাসনিম শাহীন এক বাংলাদেশি নারী ৩২দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হন। করোনায় আক্রান্তের সময় তিনি গর্ভবতী ছিলেন। হঠাৎ মরণব্যাধি ভাইরাসে যখন তিনি আক্রান্ত হলেন তখন তাসনিমকে কুইন্সের জ্যামাইকা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ভেন্টিলেটরে দেয়া হয়।                                                

সেই সময় ডাক্তাররা তাসনিম শাহীন এবং তাঁর সন্তানের জীবন নিয়ে শঙ্কার মধ্যে ছিলেন। তাসনিম বলতে গেলে কোমায় চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু হাসপাতালের চিকিৎসক কখনো আশা ছাড়েননি। শেষ পর্যন্ত সর্বোচ্চ চেষ্টার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তাসনিমের স্বামী শাহনেওয়াজ বলেন, একদিন ডাক্তার আমাকে কল করলেন এবং বললেন, আমার গর্ভবতী স্ত্রীর সন্তান প্রসব করতে হবে।এ কথা শুনে আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম। স্ত্রীকে নিয়েই দু:চিন্তায় আছি, তার ওপরে অজ্ঞান স্ত্রীর সন্তান প্রসব। আমি ডাক্তারকে বললাম, দেখুন ডাক্তার আমার আরও দুটো ছোট ছোট সন্তান রয়েছে। আপনি যা ভাল মনে করেন তাই করেন।                               

ডাক্তার রাম আমাকে বললেন সন্তান ডেলিভারি করতেই হবে। রিক্স হলেও আমি মনে করি এটা তোমার স্ত্রীর জন্য ভালো হতে পারে,এমনকি নতুন অতিথির জন্যও। তা না হলে দু’জনের জীবনই বিপন্ন হতে পারে। আমি ডাক্তারকে সম্মতি দিলাম। আমার কাছে আর কোন উপায়ও ছিল না। ডাক্তার রাম আমাকে প্রার্থনা করতে বললেন। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমার সন্তান ‘রিধা’ পৃথিবীর মুখ দেখল। ডাক্তার রাম বলেন, “রিধা সুস্থ ছিল। এর কিছুদিন পর দেখা গেল তাঁর মা তাসনিম নিজ থেকে নিঃশ্বাস নিচ্ছে। আমি এটা বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। আমার ডাক্তারি জীবনে এটা প্রথম দেখলাম। আমার  কাছে এটা ঘটনা মিরাক্যাল মনে হয়েছে।                  

অন্যদিকে তাসনিম বলেছেন, “তিনি বলতে পারবেন না, তাঁর কী হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, আমার যখন জ্ঞান ফিরতো আমি মনে করতাম আমি ঘুমিয়ে আছি, আমি দুর্বল। কিন্তু আমার জীবনে এতো কিছু ঘটে গেল আমি কিছুই বলতে পারলাম না।” ডাক্তার জানালেন, ৩২ দিন ভেন্টিলেটরে থাকার পর তাসনিমের জ্ঞান ফিরেছে। বর্তমানে হাসপাতালে মা ও মেয়ে সুস্থ রয়েছে। আগামী ১২মে তাঁদের হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হবে। অনেকেই বলেছেন, আল্লাহ চাইলে সবই সম্ভব।

 5,195 total views,  1 views today