উপকূলীয় এলাকায় নারিকেলের ছোবড়া শিল্প হতে পারে বেকাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের অন্যতম মাধ্যম

 সাব্বির আলম বাবু,সমাচার প্রতিনিধিঃ  দেশব্যাপী করোনা পরিস্থিতির নেতিবাচক প্রভাব ও জীবন জীবিকা নির্বাহে হিমশিম খাওয়া বিপুল জনগোষ্ঠী এখন বেকারত্বের কষাঘাতে জর্জরিত হচ্ছে। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত এই পরিবার গুলোর সদস্যদের না আছে পূঁজি না আছে চাকুরী। এদের জন্যই বর্তমানে নারিকেলের ছোবড়া দিয়ে তৈরী পন্য শিল্প হতে পারে বিকল্প কর্মসংস্থান।

বাংলাদেশ রফতানিতে মাত্র একটি পন্য তৈরী পোশাকের উপর নির্ভর করে এগিয়ে চলছে। তৈরী পোশাক শিল্প রফতানীতে দেশের জন্য ৮৬ শতাংশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে। এমতাবস্থায় দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক বিবেচনায় রফতানী খাত সম্প্রসারিত করা জরুরী দরকার। নতুন নতুন পন্য আমাদের রফতানী তালিকায় সংযোজন করা জরুরী। দেশের দক্ষিনাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকার অন্যতম ঐতিহ্য নারিকেল। এটি প্রাকৃতিক ভাবেই এই এলাকায় প্রচুর পরিমানে জন্মে এবং এই অঞ্চলের মানুষের জীবিকা নির্বাহের অন্যতম প্রধান উপাদান।

এই ফল কাঁচা থাকলে ডাব, শুকালে বলে নারিকেল। দুই অবস্থাতেই এটি খাওয়া হয় ও খেতে খুব সুস্বাদু। কিন্তু ইদানিং নারিকেল শুধু খাওয়াই হয় না খাওয়ার পর এর ফেলে দেয়া ছোবড়াটাও বেশ কাজে লাগবে। এর আঁশ দিয়ে তৈরী হচ্ছে তোশকের ভেতরের ম্যাট্রেক্স। ছোবড়ার গুড়াও এই খাতের মুল্যবান উপাদান। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, নারিকেলের ফেলে দেয়া ছোবড়া রোদে শুকিয়ে বিশেষ ভাবে কৌশলে গুড়া তৈরি করা হয়।                                                     

নারিকেল ব্যবসায়ী ইমরান জানান, আগে ছোবড়া জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার হতো। এখন এর থেকে তৈরী হয় ন্যাচারাল ফাইবার বা আঁশ। এক হাজার নারিকেলের ছোবড়ায় ৮৫ কেজি আঁশ পাওয়া যায়। সেই সাথে পাওয়া যায় ১৬৫ কেজির মতো গুড়া। নারিকেলের ছোবড়ার তৈরী পন্যের চাহিদা বিবেচনা করে বাংলাদেশ সরকারের বানিজ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক ২০১৫ সালে ৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ গেজেটে ৩.৫.২(১৪) ধারায় নারিকেলের ছোবড়াকে বিশেষ উন্নয়ন মূলক খাত হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ছোবড়া থেকে তৈরি পাপোষ, জাজিম, রশি, সোফার গদি ইত্যাদি। বিসিক থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে শ্রমিকরা কারখানায় এই পন্য গুলো তৈরি করে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে এগুলো ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়। এসব দেশে বাংলাদেশের নারিকেলের ছোবড়ার তৈরী পন্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। যথাযথ সরকারী ও বেসরকারী প্রশিক্ষন এবং পৃষ্ঠপোষকতা পেলে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পাশাপাশি হতে পারে দেশের বিপুল পরিমান বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান।

 6,043 total views,  2 views today