জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে !

জাপানের পুলিশ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের হত্যাকারী সন্দেহে ঘটনাস্থল থেকে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক থেকে কবির আহমেদঃ জাপান থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছেন শুক্রবার (৮ জুলাই) এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় পিছনের দিক থেকে আচমকা খুব কাছ থেকে জনপ্রিয় এই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ওপর দুইবার গুলিবর্ষণ করা হয়।
পরে হাসপাতালে জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে’র মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ভয়েস অফ আমেরিকার খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবার(৮ জুলাই) এক রাজনৈতিক প্রচার অভিযানে বক্তব্য দেয়ার সময় তাকে খুব কাছ থেকে পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা হত্যাকারী গুলি করলে তার পিঠ দিয়ে গুলি বিদ্ধ হয়ে বুক ঝাঝরা হয়ে যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে, তিনি জাপানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের মধ্যে অন্যতম একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
জাপানের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী নারা প্রিফেকচারের একটি হাসপাতালে ৬৭ বছর বয়সী আবে’র মৃত্যু হয়। গুলি লাগার পর, ঐ হাসপাতালে তার চিকিৎসা করা হচ্ছিল। আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়েছে, যে বন্দুক থেকে গুলি চালানো হয়েছে, সেটি হাতে তৈরি একটি বন্দুক ছিল।
ওসাকার ঠিক পূর্বপাশে, নারা শহরের একটি রেলস্টেশনের বাইরে, স্থানীয় সময় আনুমানিক সকাল ১১:৩০ মিনিটের দিকে , একটি ছোট প্রাচার-আয়োজনে বক্তব্য রাখছিলেন আবে। সেই সময়ে এক ব্যক্তি তার দিকে ছুটে এসে দুইবার গুলি চালায়। সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও দেখে মনে হয়েছে যে, আশপাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষজন তাকে সাহায্য করতে ছুটে আসেন। তখন চারিদিক সাদা ধোঁয়ায় ঢাকা ছিল; আর, আবে নিথর হয়ে মাটিয়ে পড়ে রয়েছেন।
হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানান যে, আবে-কে আকাশপথে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসার পর, তার জীবিত থাকার কোন লক্ষণ পাওয়া যায়নি। ডাক্তাররা তার রক্তক্ষরণ বন্ধ করার চেষ্টা করেন এবং তার শরীরে রক্তদানের উদ্যোগ নেন। কিন্তু আবে-কে বিকাল ৫:০৩ মিনিটে মৃত ঘোষণা করা হয়। তারা জানান যে, একটি গুলি আবে’র হৃৎপিন্ডে ঢুকে পড়ে এবং অপরটি তার ঘাড়ে লাগে।
গুলি চালানোর ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে, নারা শহরের ৪১ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান এনএইচকে ঐ ব্যক্তিকে তেতসুয়া ইয়ামাগামি হিসেবে শনাক্ত করেছে। এনএইচকে বলেছে যে, ঐ ব্যক্তি জাপানের প্রতিরক্ষা বাহিনীতে তিন বছর চাকরি করেছেন। এনএইচকে আরও জানায়, ঐ ব্যক্তি পুলিশকে বলেছেন যে, তিনি আবে-কে নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিলেন এবং তাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিলেন।
গুলির ঘটনার পরবর্তী সময়ের ভিডিও দেখে মনে হয়েছে যে, সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটকের পর, দুইটি মোটা নলবিশিষ্ট বাক্স আকৃতির একটি অস্ত্র সড়কে পড়ে ছিল। গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ঐ অস্ত্রটি দেখে মনে হয়েছে, এটি বাড়িতে তৈরি কোন অস্ত্র। জাপানে কঠোর বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন রয়েছে, যার ফলে সেখানে বন্দুক কেনা প্রায় অসম্ভব ব্যাপার।
তথ্যসূত্র: ভয়েস অফ আমেরিকা,অস্ট্রিয়ান মিডিয়া